মোহাম্মদ সাঃ বলেছেন, “মাহাদী আমার বংশধরদের মধ্যে থেকে হবেন”
(আবু দাঊদ)। এছাড়া অন্য হাদীসে এসেছে, “ইমাম মাহাদী আমার কন্যা ফাতিমা এর
বংশধর থেকে উত্থিত হবেন”(ইবনে মাজাহ)। অন্য হাদীসে এসেছে, “ইমাম মাহাদীর নাম আমার নামে হবে এবং ইমাম মাহাদীর পিতার নাম আমার পিতার নামের মতো হবে” (আবু দাঊদ)
মির্জা সাহেব মোহাম্মদ সাঃ কিংবা ফাতেমা রাঃ এর বংশধর ছিলেন না।
মির্জা গোলামের নিজের ভাষায়, “আমার দাদার নাম আতা মুহাম্মদ, আমার গোত্র
মুঘল বরসাল। সংরক্ষিত দলিল পত্র থেকে বুঝা যায় আমার পূর্বপুরুষেরা সমরকন্দ
থেকে আগমন করেছেন” (মির্জার রচিত ‘কিতাবুল বারিয়া’ গ্রন্থ থেকে)।
ইতিহাসের সম্পর্কে যার নূন্যতম ধারনা আছে, সেও জানে যে ‘মোঘল’ তুর্কি
বংশের। তার মানে মির্জা কোন ভাবেই মোহাম্মদ সা; এর বংশধর নয়। আর মির্জার
বাবার নাম ‘গোলাম মর্তুজা’, অথচ মাহাদীর বাবার নাম হবে আব্দুল্লাহ যেই রকম
মোহাম্মদ সা; এর বাবার নাম।
ইমাম মাহাদী ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিচিতি লাভ করবেন......
“মদিনা থেকে জনৈক ব্যক্তি মক্কায় গমন করবে। মক্কার একদল লোক তাঁকে তার
জায়গা থেকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আসবে এবং হাজরে আসওয়াদের সামনে
মাকামে ইবরাহীমের কাছে তাঁর আনুগত্যের শপথ নেবে” (সূনানে আবু দাঊদ)
মির্জা গোলাম সাহবে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিচিতি লাভ করেন নি বরং তিনি
ঘোষনা দিয়েছে তিনি ইমাম মাহাদী, এমনকি লোকজনে তার কাছে ‘হাজরে আসওয়াদের
সামনে মাকামে ইবরাহীমের কাছে’ শপথ নেবে কোত্থেকে?? মির্জা সাহেব তার জীবদ্ধশায় কখনো পবিত্র ভূমি মক্কা কিংবা মদীনায় যাওয়ার সু-ভাগ্য লাভ করেননি।
ইমাম মাহাদীর আগমনের স্থান......
মোহাম্মদ সাঃ বলেছেন, “তোমাদের গুপ্তধনের নিকট তিনজন লোক ঝগড়া করবে। প্রত্যেকেই হবে খলীফার পুত্র কেউ তা দখল করতে পারবেনা। অতঃপর পূর্বের দিক থেকে কালো পতাকাধারী একদল সৈনিক আসবে। তারা ব্যাপক হত্যাকান্ড চালাবে। হাদীসের বর্ননাকারী বলেন, এরপর নবী সাঃ এমন কিছু বিষয়ের কথা বর্ণনা করলেন যা আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। তোমরা যখন তাদেরকে দেখতে পাবে তখন তাদের নেতার হাতে বাইয়াত করবে যদিও বরফের ওপর হামাগুড়ি দিয়ে ঊপস্থিত হতে হয়। কেননা তিনি হলেন আল্লাহর খলীফা মাহাদী” (ইবনে মাজা- কিতাবুল ফিতান, নাসিরুদ্দিন আলবানী এটিকে সহীহ বলেছেন, তবে ‘আল্লাহর খলীফা মাহাদী’ অংশ ব্যতীত)
ইবনে কাসীর বলেন, উল্লেখিত হাদীসে যে ‘ধন-ভান্ডার’ এর কথা বলা হয়েছে, তা হলো কাবা ঘরের ধন ভান্ডার।
ইমাম মাহাদী আবির্ভুত হবে আরবে, মদীনা মুনাওয়ারা এর পূর্বে এবং তিনি মক্কা, মদিনায় আসবেন। আর মির্জা সাহেব ‘কাবাঘর’ বিজয় তো দূরের কথা জীবনে ‘হজ্জ’ পর্যন্ত করতে মক্কা, মদিনা যাননি।
“মাহাদী আসবে আমার বংশধর হতে। তার কপাল হবে উজ্জ্বল এবং নাক হবে উঁচু।
পৃথিবী হতে জুলুম নির্যাতন দূর করে, ন্যায় ইনসাফ দ্বারা তা ভরে দিবেন। সাত
বছর পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করবেন” (আবু দাঊদ-কিতাবুল মাহাদী)
মির্জা সাহেব আরবের রাজত্ব তো দূরের কথা বরং আরব দেশে যাওয়া তার নিষিদ্ধ ছিল। মির্জা ভয়ে হজ্জ পর্যন্ত করেনি। আর ‘সাত’ বছর রাজত্ব!! তার নিজের দেশ ভারত তখন ছিল ব্রিটিশদের শাসনে। আর মির্জা সাহেব ব্রিটিশদের অধীনে চাকরি করেছে। আর ‘ন্যায়-ইনসাফ’ কীভাবে কায়েম তো দূরে থাক, বরং মির্জা সাহেব্র জীবদ্দশার (১৮৩৯-১৯০৮) পুরো সময় উপমহাদেশ ব্রিটিশদের ‘কলোনি’ হিসেবে ছিল এবং ছিল সীমাহীন নির্যাতন। “ইংরেজদের ফাঁসির কাষ্ঠে প্রতিদিন ৮০ জন করে আলেমকে ঝুলানো হতো” (ইংরেজ ঐতিহাসিক টমসন এর লেখা থেকে)।
তবে এই ফাঁসির কাষ্ঠ মির্জা গোলামের গলায় লাগানো হয়নি, কারণ সে আলেম ছিলনা, সে ছিল ব্রিটিশদের দালাল।
রানী ভিক্টোরিয়াকে সম্বোধন করে তার ভাষায়, "হে পূণ্যময়ী ভারত
সম্রাজ্ঞী মহারাণী ভিক্টোরিয়া! তোমার মহত্ব ও সুখ্যাতি তোমার মোবারক হোক।
এদেশের ওপর খোদার দৃষ্টি রয়েছে। যে প্রজার ওপর তোমার মতা বিরাজমান তাদের
ওপর খোদার রহমতের হাত রয়েছে। তোমার পবিত্র নিয়তের অনুপ্রেরণায় খোদা
আমাকে পাঠিয়েছেন। যাতে পরহেজগারী, সৎচরিত্র ও শান্তির পথ দুনিয়াতে আবার
প্রতিষ্ঠিত করতে পারি” (মির্জার লিখিত ‘সেতারায়ে কায়সারাহ’ গ্রন্থ থেকে)
জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, “ঈসা আঃ যখন অবতরণ করবেন তখন
মুসলমানদের আমির তাঁকে বলবেন। আসুন আমাদের নামাজের ইমামতি করুন। ঈসা আঃ
বলবেন, বরং তোমাদের আমীর তোমাদের মধ্যে হতেই। এই উম্মতের সম্মানের কারণেই
তিনি এই মন্তব্য করবেন” (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, আলবানী এটিকে সহীহ বলেছেন।)
‘আল মানারুল মুনীফ’ গ্রন্থেও এই হাদীসটি বর্ণিত আছে এবং শেষে বর্ধিত অংশটুকু হল, “যেই আমীরের পিছনে মুসলমানগণ নামায পড়বেন তিনি হলেন মাহাদী’ (ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম বলেছেন, হাদীসের সনদ ভাল)
এই হাদীসে স্পষ্ট ঈসা ইবনে মরিয়ম আঃ এবং ইমাম মাহাদী এক ব্যক্তি নয়।
আর অন্যান্য হাদীসে উল্লেখ আছে ঈসা আঃ এর আবির্ভাব হবে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করলে। আর এখনো পর্যন্ত দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করেনি এবং ঈসা আঃ এরও আবির্ভাব হয়নি। মির্জা অবশ্য এখানে সুন্দর ভাবে ‘অপ ব্যাখ্যা’ করেছে, এবিষয় নিয়ে পরে আলোচনা করেছি।
আর অন্যান্য হাদীসে উল্লেখ আছে ঈসা আঃ এর আবির্ভাব হবে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করলে। আর এখনো পর্যন্ত দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করেনি এবং ঈসা আঃ এরও আবির্ভাব হয়নি। মির্জা অবশ্য এখানে সুন্দর ভাবে ‘অপ ব্যাখ্যা’ করেছে, এবিষয় নিয়ে পরে আলোচনা করেছি।
আমাকে কিছুদিন আগে এক ভাই বলল, ভাই ইমাম মাহাদী কখন আসবে যেহেতু ইমাম মাহাদীর কাছে বায়’আত করতে বলা হয়েছে? আমি তাকে বলব, কাদিয়ানি অন্তত ইমাম মাহাদী নয়। কারন উপরের ‘নির্দেশক’ গুলো ইমাম মাহাদীর পরিচায়ক, সহীহ হাদীসে এর চেয়ে খুব বেশী কিছু নাই। আর, মনে রাখবেন, ইমাম মাহাদী নিজেকে মাহাদী বলে প্রচার করবেনা। কিংবা তার সমর্থকেরা ফেসবুকে, ওয়েভসাইটে ইমাম মাহাদীর প্রচারণা চালাবে না। তিনি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আত্মপ্রকাশ করবেন।
এরপরো কি বুঝার বাকী আছে?? একথা চিন্তা করতেও কষ্ট হয়, ইমাম মাহাদী
ব্রিটিশদের (কাফেরদের) সামনে নম নম করবেন কিংবা নিজেকে মাসীলে ঈসা বলে
ঘোষনা দিবেন। এবং মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন যে আমিই ইমাম মাহাদী কিংবা
তিনি নিজেকে নবী দাবী করবেন বরং নবী, রাসূলের চেয়ে বেশী কিছু কিংবা ইমাম
মাহাদী এসে কুরআনের (অপ) ব্যখ্যা করতে যাবেন কিংবা তার মৃত্যু হবে কলেরায়
কিংবা টয়লেটে!!
No comments:
Post a Comment